অশোকসুন্দরী: শিব-পার্বতীর কন্যা ও গণেশের বোন—হিন্দু পুরাণের এক বিস্মৃত দেবীর গল্প
অশোকসুন্দরীর জন্ম হয় কৈলাস পর্বতে, দেবাদিদেব শিব ও দেবী পার্বতীর আবাসস্থলে। পদ্ম পুরাণ অনুসারে, শিবের দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে পার্বতী একাকিত্ব অনুভব করেন এবং কল্পবৃক্ষের নিচে কন্যা সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন। এই প্রার্থনার ফলেই জন্ম হয় অশোকসুন্দরীর—যার নামের অর্থ “দুঃখহীন সুন্দরী” (Ashoka = দুঃখহীন, Sundari = সুন্দরী)। তিনি ছিলেন পার্বতীর আনন্দের উৎস এবং তাঁর সৌন্দর্য ও কৃপা ছিল অতুলনীয়।
অশোকসুন্দরীর গল্প প্রধানত পদ্ম পুরাণে পাওয়া যায়। তিনি গণেশের বোন এবং তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা গণেশের শিরচ্ছেদ সংক্রান্ত কাহিনির সঙ্গে যুক্ত। যখন শিব গণেশের শিরচ্ছেদ করেন, তখন অশোকসুন্দরী ভয়ে একটি লবণের বস্তার পেছনে লুকিয়ে পড়েন।
এই ঘটনার পর, পার্বতী রাগে তাঁকে অভিশাপ দেন—যাতে তিনি লবণের অংশে পরিণত হন। ভারতীয় সংস্কৃতিতে লবণ একটি অপরিহার্য উপাদান—যা খাবারের স্বাদ বাড়ায় এবং পূর্ণতা দেয়।
অশোকসুন্দরীর লবণের সঙ্গে সম্পর্ক এই বার্তাই দেয় যে, তিনি ছিলেন শিব-পার্বতী পরিবারকে পূর্ণতা দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। পরে, গণেশের পুনর্জন্মের পর পার্বতী অভিশাপ তুলে নেন এবং অশোকসুন্দরী আবার তাঁর পূর্ণ রূপে ফিরে আসেন।
অশোকসুন্দরী হিন্দু ধর্মে তেমনভাবে পূজিত না হলেও, তাঁর গল্পে রয়েছে গভীর প্রতীকী তাৎপর্য:
এককথায় অশোকসুন্দরীর গল্প হিন্দু পুরাণের এক বিস্মৃত রত্ন। যদিও তিনি গণেশ বা পার্বতীর মতো জনপ্রিয় নন, তাঁর কাহিনি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—প্রতিটি দেব-দেবীর গল্পে রয়েছে গভীর মানবিক ও আধ্যাত্মিক বার্তা। সঙ্গ, আনন্দ, এবং পারিবারিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে অশোকসুন্দরী আজও আমাদের ভাবনায় স্থান করে নিতে পারেন ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊