এয়ার কানাডা ধর্মঘটে অচল বিমান পরিষেবা, সরকারের হস্তক্ষেপেও সমাধান অধরা
কানাডার বৃহত্তম বিমান সংস্থা এয়ার কানাডা (Air Canada) গত শনিবার (১৬ আগস্ট, ২০২৫) থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে, যখন ১০,০০০ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট একযোগে ধর্মঘটে নামেন। আট মাস ধরে চলা চুক্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর, কানাডিয়ান ইউনিয়ন অব পাবলিক এমপ্লয়িজ (CUPE)-এর সদস্যরা রাত ১টা নাগাদ কাজ বন্ধ করে দেন। এর ফলে প্রতিদিন প্রায় ১.৩ লক্ষ যাত্রী বিশ্বজুড়ে বিপাকে পড়ছেন, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের চূড়ান্ত সময়ে।
ধর্মঘটের মূল কারণ—বেতন কাঠামো ও বিমানের মাটিতে কাজের জন্য কোনও পারিশ্রমিক না পাওয়া। ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা অভিযোগ করেছেন, বোর্ডিং, সেফটি চেক, মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি—এই সব গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য তাঁদের কোনও অর্থ দেওয়া হয় না। এয়ার কানাডা চার বছরে ৩৮% মোট পারিশ্রমিক বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলেও, ইউনিয়নের দাবি, প্রকৃত বৃদ্ধির হার অনেক কম এবং তা মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
শনিবার দুপুরেই কানাডার ফেডারেল জবস মিনিস্টার প্যাটি হাইডু Section 107 অফ কানাডা লেবার কোড প্রয়োগ করে ধর্মঘট স্থগিতের নির্দেশ দেন এবং বিষয়টি কানাডা ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস বোর্ড (CIRB)-এর কাছে পাঠান। CIRB নির্দেশ দেয়, রবিবার দুপুর ২টার মধ্যে সমস্ত কর্মীকে কাজে ফিরতে হবে। এয়ার কানাডা প্রথমে জানায়, তারা রবিবার সন্ধ্যায় পরিষেবা পুনরায় শুরু করবে, কিন্তু পরে জানায়, তারা সোমবার সন্ধ্যায় ফ্লাইট চালু করবে।
তবে CUPE এই নির্দেশকে “অসাংবিধানিক” বলে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সদস্যরা কাজে ফিরবেন না। সংগঠনের সভাপতি মার্ক হ্যানকক বলেন, “আমরা বলছি না। পুরো প্রক্রিয়াটাই অন্যায্য।” তিনি অভিযোগ করেন, এয়ার কানাডা ইচ্ছাকৃতভাবে আলোচনা এড়িয়ে গেছে, কারণ তারা জানত সরকার তাদের পক্ষে হস্তক্ষেপ করবে।
এই ধর্মঘটের ফলে শুধু যাত্রী নয়, গুরুত্বপূর্ণ কার্গো পরিবহনেও প্রভাব পড়েছে। কানাডার ৪০% মেডিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য এয়ার কানাডার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। সরকার জানিয়েছে, prolonged ধর্মঘট হলে অর্থনীতিতে আরও বড় প্রভাব পড়বে।
এয়ার কানাডা (Air Canada) জানিয়েছে, যেসব যাত্রীর ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, তারা পূর্ণ রিফান্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিকল্প ফ্লাইটের ব্যবস্থাও করা হবে, তবে গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের চাপে তাৎক্ষণিক বুকিং নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
এই ধর্মঘট শুধু একটি শ্রমিক আন্দোলন নয়, এটি কানাডার বিমান শিল্পে শ্রমিক অধিকার, ন্যায্য পারিশ্রমিক এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনার প্রভাব শ্রমিক ইউনিয়ন ও বিমান সংস্থার সম্পর্কের উপর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊