Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Earthquake: ভোরবেলা ভূমিকম্প, আতঙ্কে জনজীবন

ভোরবেলা মায়ানমারে ভূমিকম্প, আতঙ্কে জনজীবন

ভোরবেলা মায়ানমারে ভূমিকম্প, আতঙ্কে জনজীবন


মায়ানমারে বৃহস্পতিবার ভোরে ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জনজীবন। জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (NCS) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪.১ এবং এটি স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ১০ মিনিটে অনুভূত হয়। কেন্দ্রস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে—যা ভূকম্পনের দিক থেকে অগভীর হিসেবে বিবেচিত।

ভূমিকম্পের কম্পন এতটাই তীব্র ছিল যে মানুষ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে এবং রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। যদিও এতে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি, তবে হঠাৎ এই কম্পনে তৈরি হয় চরম আতঙ্ক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অগভীর ভূমিকম্প সাধারণত বেশি বিপজ্জনক, কারণ কম গভীরতার কারণে এর কম্পন ভূপৃষ্ঠে দ্রুত এবং অধিক শক্তিতে পৌঁছায়—ফলে বাড়িঘর ও অবকাঠামোর ওপর প্রভাব বেশি হয়।

মায়ানমার এমনিতেই একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। এটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফলে এখানে মাঝারি থেকে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প প্রায়শই ঘটে থাকে। চলতি বছরেই ১ জুলাই ৪.২ মাত্রার ও ২৮ মার্চ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছিল। মার্চের ভূমিকম্পে ৩৫০০ জনের বেশি প্রাণ হারায় এবং মান্দালয়-সাগেং অঞ্চলের বিস্তীর্ণ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভূমিকম্প কেন হয়, সেই প্রশ্নে ভৌগোলিক ব্যাখ্যায় বলা হয়—পৃথিবীর ভূত্বক ও উপরের স্তর অর্থাৎ লিথোস্ফিয়ার অনেকগুলো টেকটোনিক প্লেট দিয়ে গঠিত। এই প্লেটগুলি ধীরে ধীরে একে অপরের দিকে সরে আসে বা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত শক্তি যখন হঠাৎ মুক্তি পায়, তখনই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল হলো সেই স্থান যেখানে প্রথম প্লেট সরে গিয়ে কম্পন শুরু হয় এবং সেখান থেকে তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রা বা তার বেশি শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে প্রায় ৪০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে ব্যাপক প্রভাব পড়ে এবং সে অঞ্চলে ধ্বংসের আশঙ্কা বাড়ে।

মায়ানমারে সাম্প্রতিক এই ভূমিকম্প বড় কোনো ধ্বংসের খবর না দিলেও, এটি ভবিষ্যতের বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন ভূবিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, ভূকম্পন যদি বারবার হয় এবং কেন্দ্রস্থল অগভীর হয়, তবে তা বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ, সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচার এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি প্রস্তুতি জরুরি হয়ে পড়েছে। জনসাধারণকে ভূমিকম্পের সময় করণীয় এবং নিরাপদ আশ্রয়ের বিষয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার দরকার রয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণেও ভূমিকম্প-সহনশীল প্রযুক্তি ব্যবহার এখন সময়ের দাবি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code