Koneru Humpy: একজন কিংবদন্তী ভারতীয় দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার
কোনেরু হাম্পি, একজন ভারতীয় দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার (Indian Chess Grandmaster), তার অনন্য খেলার ধরন এবং দাবা থেকে দুই বছরের বিরতির পর ২০২০ সালে বিশ্ব র্যাপিড দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ (World Rapid Chess Championship) জেতার জন্য সুপরিচিত। ১৯৮৭ সালের ৩১শে মার্চ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় জন্মগ্রহণকারী হাম্পি, বর্তমানে বিশ্ব র্যাঙ্কিং ২০৪ এবং ক্লাসিক্যাল এলো রেটিং ২৫৮৬ সহ, সর্বকালের সেরা দাবা খেলোয়াড়দের (greatest chess players) মধ্যে একজন হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি ভারত এবং বিশ্বের অনেক নারীর জন্য পেশাদারভাবে দাবা খেলার অনুপ্রেরণা।
প্রাথমিক জীবন এবং উত্থান:
কোনেরু হাম্পি মাত্র পঞ্চম শ্রেণী থেকেই তার বাবার খেলা দেখে দাবার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তার বাবা তাকে প্রশিক্ষণ দেন এবং খুব দ্রুতই, ১৯৯৩ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে, তিনি জেলা চ্যাম্পিয়ন (District Champion) হন। ১৯৯৫ সালের মধ্যে তিনি অনূর্ধ্ব-৮ বিভাগে জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন (National Chess Champion) হন এবং এরপর ১৯৯৬ সালে অনূর্ধ্ব-১০, ১২ এবং ১৫টি প্রতিযোগিতা জেতেন। ১৯৯৬ সালে অনূর্ধ্ব-১০ এবং ১৯৯৮ সালে অনূর্ধ্ব-১২ বিভাগে তিনি বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপও (World Youth Championship) জিতেছিলেন। মাত্র ১১ বছর বয়সেই, কোনেরু হাম্পি তার অসাধারণ খেলা এবং টুর্নামেন্টের মাধ্যমে দাবা জগতে নিজের ছাপ রেখেছিলেন। ২০০০ এবং ২০০১ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ এবং জুনিয়র বিভাগে আরও দুটি শিরোপা জিতে তিনি দাবা জগতের প্রায় সমস্ত যুব চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি (Youth Championship Trophies) জিতে নিজেকে বিশ্বব্যাপী একজন দাবা প্রতিভা (Chess Prodigy) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব এবং আন্তর্জাতিক সাফল্য:
২০০২ সালে, কোনেরু হাম্পি আবারও দাবা জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন, মাত্র ১৫ বছর ১ মাস বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করে জুডিট পোলগারের (Judit Polgar) রেকর্ড ভেঙে সেই সময়ের সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। যদিও ২০০৮ সালে হাউ ইফান (Hou Yifan) এই রেকর্ড ভেঙেছিলেন, তবুও হাম্পির এই অর্জন ছিল অসাধারণ। ২০০৪ সালে তিনি মহিলা বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে (Women's World Chess Championship) অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেন এবং সেমিফাইনাল (semi-finals) পর্যন্ত পৌঁছান, যেখানে তিনি আইএম একাতেরিনা কোভালেভস্কায়ার (IM Ekaterina Kovalevskaya) কাছে পরাজিত হন। ২০০৫ সালে তিনি নর্থ ইউরালস কাপ (North Urals Cup) জেতেন, যেখানে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দাবা খেলোয়াড় একে অপরের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন। এই টুর্নামেন্টে তিনি কোস্টেনিউক (Kosteniuk) এবং গ্র্যান্ডমাস্টার জু ইউহুয়ার (Grandmaster Xu Yuhua) বিরুদ্ধে অর্ধেক পয়েন্টের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এরপর ২০০৭ সালে তিনি জুডিট পোলগারের পর ২৬০০ এলো রেটিং (Elo Rating) অতিক্রমকারী দ্বিতীয় খেলোয়াড় হন।
দাবা থেকে বিরতি এবং দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন:
কোনেরু হাম্পি জুনিয়র হিসেবে দাবা জগতে প্রায় সবকিছুই অর্জন করেছেন। ২০০৮ সালের পর, তিনি মহিলা বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য যোগ্য হয়েছিলেন এবং বিশ্বজুড়ে আরও অনেক টুর্নামেন্ট জিতে তার মুকুটে নতুন পালক যোগ করতে প্রস্তুত ছিলেন। তিনি বিশ্ব শিরোপার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু দুবার সেমিফাইনালে হেরেছিলেন। তিনি টানা চার সংস্করণে মহিলা দাবা গ্র্যান্ড প্রিক্সে (Women's Chess Grand Prix) রানার আপও হয়েছিলেন, যা একটি রেকর্ড। তিনি বিশ্বজুড়ে অনেক কাপ এবং টুর্নামেন্টে ভারতের একজন প্রধান দল খেলোয়াড় (key team player) ছিলেন এবং অনেক অনুষ্ঠানে দলের হয়ে জয়লাভ করেছিলেন। ২০১৬ সালে, কোনেরু তার সন্তানের জন্ম এবং তার যত্ন নেওয়ার জন্য দাবা থেকে বিরতি নিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে, তিনি প্রতিযোগিতামূলক দাবাতে (competitive chess) ফিরে আসেন এবং ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দাবা অলিম্পিয়াডে (Chess Olympiad) খেলেন, যেখানে তার দল ১৫১টি দলের মধ্যে ৮ম স্থান অর্জন করে। ২০১৯ সালে, কোনেরু মহিলা বিশ্ব র্যাপিড দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে সারা বিশ্বের দাবা খেলোয়াড়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ২০২০ সালে তিনি কেয়ার্নস কাপও (Cairns Cup) জিতেছিলেন, যা তার বিরতির পর এক দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনকে চিহ্নিত করে। কোনেরুর মতে, এই বিরতি তাকে টুর্নামেন্টের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে। তিনি আরও শক্তিশালীভাবে ফিরে এসেছেন এবং আবারও দাবাতে রেকর্ড ভাঙতে এবং নতুন রেকর্ড তৈরি করতে প্রস্তুত।
0 تعليقات
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊