পুলিশি নোটিশের হুমকি উপেক্ষা করে সফল নবান্ন চলো মিছিল
![]() |
ছবি: নিজস্ব |
আজ ছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, যৌথ মঞ্চ ও বঞ্চিত একাধিক সংগঠন যথা চাকরিপ্রার্থী, চাকুরিজীবি ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের যৌথ আহ্বানে নবান্ন অভিযান কর্মসূচী। কিন্তু আগের দিন থেকেই নেতৃত্ব তথা সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি পৌছে যায় পুলিশি নোটিস। নোটিশের মূল বক্তব্য ছিল হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এই নবান্ন চলো কর্মসূচী কে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এছাড়াও সমর্থকদের মিছিলে অংশগ্রহণ করতে বারণ করা হয়। কিন্তু এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারী নেতৃত্বের মতে হাইকোর্ট এ ধরণের কোন রায় দেননি। কেবলমাত্র ব্যবসায়িক ক্ষতি না করতে বলা হয়েছে। তাই নেতৃত্ব হাইকোর্টের রায় কে মান্যতা দিয়ে হাওড়া স্টেশন পার্শ্ববর্তী মঙগলাহাটের রাস্তায় না গিয়ে অর্থাৎ ব্যাবসায়িক অঞ্চল বাদ দিয়ে স্টেশন থেকে সোজাসুজি ফোরসোর রোড দিয়ে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর ঠিক বেলা ১২ টায় মিছিল হওড়া স্টেশন থেকে শুরু করে নবান্ন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু হাওড়া পুলিশ ফোরশোর রোডের মুখে ব্যারিকেড ও গার্ডরেল দেওয়ায় সেই স্থানেই অবস্থান কর্মসূচী চলতে থাকে। বর্ষাকালের প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেই অবস্থান চলতে থাকে।
প্রসঙগত কোলকাতার শহীদ মিনারে বিগত ৯১৪ দিন ধরে অবস্থান করে চলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের হয়ে প্রায় ৫০ টি গণ সংগঠন। শুরুটা হয়েছিল সুদীর্ঘ ডি.এ বঞ্চনার বিরুদ্ধে সমবেতভাবে লড়াই শুরুর মধ্য দিয়ে। এই দাবীর সঙগে ধীরে ধীরে যোগ হলো নিত্য নতুন একাধিক বঞ্চনা তথা দাবী যথা চাকরী চুরি, নায্য বেতন, শূন্যপদে স্থায়ী ও স্বচ্ছ নিয়োগ, যোগ্য অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণ, অনায্য ও প্রতিহিংসামূলক বদলী প্রত্যহার, সমস্ত সরকারী প্রতিষ্ঠানে মহিলাদের সুরক্ষা প্রদান, 2016 সালের SSC পরীক্ষার্থীদের OMR প্রকাশ ইত্যাদি।
এর আগে মাননীয় হাইকোর্টের রায় নিয়ে দুটি নবান্ন অভিযান তথা আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও সরকারের টনক নড়ানো যায়নি। এমনই দাবী সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। বর্তমানে দেশের প্রায় সমস্ত রাজ্য তাদের কর্মচারীদের AICPI অনুযায়ী ডি.এ প্রদান করলেও এ রাজ্য একমাত্র ব্যাতিক্রম। এমন কি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বকেয়া ডি.এ নিয়ে রাজ্য সরকার প্রায় ৪-৫ বার কোর্টে হেরে যায় এবং এই রায় কে মান্যতা না দিয়ে বকেয়া ডি.এ দেওয়ার বদলে যাতে না দিতে হয় তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে এস.এল.পি মামলা দায়ের করে। প্রায় কয়েক বছর ধরে তারিখ পে তারিখ সহ নানা টালবাহানা হওয়ার পর অবশেষে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ সুপ্রিম কোর্টে পার্টি হওয়ার আবেদন করে এবং শেষে ডি.এ মামলায় অংশগ্রহণ করতেই দেখা যায়।
মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট এ রাজ্যের সরকারী কর্মচারীদের পক্ষে বকেয়া ডি.এ এর ২৫% এক মাসের মধ্যে দিতে আদেশ দান করেন। কিন্তু এরপরও সরকার কে সেই বকেয়ার ২৫% ডি.এ দিতে গড়িমসি করতে দেখা যায়। সুপ্রিম কোর্টে পুনরায় সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে একটি নতুন ভাবে আবেদন করতে দেখা যায় সরকারের তরফ থেকে। ইতিমধ্যে রায়ের অবমাননা হওয়ায় একাধিক সংগঠন কোর্ট অবমামনার মামলা করে সরকারের বিরুদ্ধে। আগামী ৪ ঠা আগষ্ট সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানী। কিন্তু সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ও যৌথ মঞ্চ বিগত কয়েক বছর ধরে সারকারের ডি.এ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচী নিয়ে চলেছেন। বলাবাহুল্য আজকের এই যৌথ কর্মসূচীতে ২০১৯ সালের পরবর্তী বর্তমানে সরকারী কর্মচারী সমেত সমস্ত পেনশনভোগীরা যে চলতি বেতন পাচ্ছেন বা পেনশন পাচ্ছেন তার উপর নায্য ডি.এ দেওয়ার দাবী নিয়েই আন্দোলন। শুধু আইনি লড়াই তে সীমাবদ্ধ না থেকে রাস্তার আন্দোলনে থাকার লক্ষ্যেই মূলত এই নবান্ন চলো কর্মসূচী।
সমস্ত স্তরের সরকারী কর্মচারী,শিক্ষক,অধ্যাপক, ডাক্তার, নার্স, গ্রন্থাগার, পঞ্চায়েত,মিউনিসিপালিটি কর্মী সমেত সমস্ত পেনশনারগন এই মঞ্চে সমবেত হয়েছেন। রয়েছেন PHE পাম্প অপারেটর,ICDS কর্মী, NSQF টিচার্স, প্যারা টিচার,আয়ুস চিকিৎসক ও চুক্তিভিত্তিক নানা কর্মীরা। একই সঙ্গে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী,চাকরিজীবী, চাকরিহারা যুবক,যুবতীরা এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করছেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊