ভারতীয় শেয়ার বাজারে বড় ধস-ট্রেড ডিল অনিশ্চয়তা ও TCS ছাঁটাইয়ের ফল !
৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে ভারতীয় শেয়ার বাজারে এক উল্লেখযোগ্য ধস লক্ষ্য করা গেছে। Bombay Stock Exchange-এর Sensex সূচক প্রায় ৫৯০ পয়েন্ট এবং National Stock Exchange-এর Nifty50 সূচক প্রায় ১৫৬ পয়েন্ট পতন দেখিয়েছে। এই পতন বাজারে চলতি মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধসগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক ট্রেড চুক্তির অনিশ্চয়তা এবং দেশের বৃহত্তম IT সংস্থা TCS-এর কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেড চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল, যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে কৃষি, প্রযুক্তি এবং পরিষেবা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে চুক্তির শর্তাবলীতে মতবিরোধের কারণে এখনো কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভারতের কৃষি ও দুগ্ধ শিল্পে প্রবেশাধিকার চাওয়ার বিষয়টি ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করেছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন যে, চুক্তি ব্যর্থ হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ট্যারিফ বৃদ্ধি পেতে পারে, যা সরাসরি ভারতীয় রপ্তানি ও শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অন্যদিকে, TCS-এর পক্ষ থেকে আজ ঘোষণা করা হয়েছে যে তারা প্রায় ১২,০০০ কর্মী ছাঁটাই করবে, যা তাদের মোট কর্মীসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ। এই ছাঁটাই মূলত মিড ও সিনিয়র লেভেলের কর্মীদের মধ্যে হবে এবং সংস্থাটি জানিয়েছে যে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশন প্রযুক্তির দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে চায়। এই ঘোষণার পরপরই TCS-এর শেয়ার মূল্য প্রায় ২ শতাংশ কমে যায়, যা IT সেক্টরের অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই দুই বড় ঘটনার পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা এবং প্রথম ত্রৈমাসিকের (Q1FY26) আয় ও লাভের হতাশাজনক ফলাফলও বাজারে অস্থিরতা বাড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এখন ‘sell-on-rise’ মনোভাব কাজ করছে, অর্থাৎ সামান্য মূল্যবৃদ্ধির সুযোগে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেকেই।
এই পরিস্থিতিতে বাজারে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, Nifty50 সূচক যদি ২৪,৫০০-এর নিচে নেমে যায়, তাহলে আরও বড় পতনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিত দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্থিতিশীল এবং মৌলিকভাবে শক্তিশালী কোম্পানির শেয়ারে মনোযোগ দেওয়া।
বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এবং কর্পোরেট সিদ্ধান্ত—এই তিনটি উপাদান একত্রে বাজারকে কতটা প্রভাবিত করতে পারে। ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগকারীদের আরও সচেতন ও তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
0 تعليقات
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊