AI Bhagavad Gita: গুরচরণ দাসের কণ্ঠে জীবন্ত হয়ে উঠছে ভগবদ গীতা
নিউ ইয়র্ক, ৮ই জুলাই, ২০২৫: নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা 'Rebind' এবার এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে কর্পোরেট সেক্টর থেকে খ্যাতিমান লেখক ও গবেষক হয়ে ওঠা গুরচরণ দাসের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে একটি এআই ভগবদ গীতা (AI Bhagavad Gita)। এই প্রকল্পটি এআই-এর মাধ্যমে "বিশ্বের প্রিয় বইগুলি উন্মুক্ত করার" লক্ষ্যে কাজ করছে এবং এটি পাঠকদের জন্য এক নতুন ধরনের ইন্টারেক্টিভ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসছে।
কর্পোরেট থেকে এআই গাইড: গুরচরণ দাসের নতুন ভূমিকা
প্রখ্যাত দার্শনিক ও ঔপন্যাসিক ক্ল্যান্সি মার্টিনের একটি ফোন কল গুরচরণ দাসের জীবনে এক অপ্রত্যাশিত সুযোগ নিয়ে আসে – একটি এআই বইয়ের সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ। ভগবদ গীতা নিয়ে তাঁর দীর্ঘদিনের পড়াশোনা এবং বিশ্লেষণকে তিনি এখন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকল্পে পরিণত করছেন। 'Rebind' এর এই প্রকল্পে লেনা ডানহাম থেকে রোক্সেন গে, সালমান রুশদিসহ বিভিন্ন শ্রেণীর লেখকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আলাপচারিতার মাধ্যমে গীতা পাঠের নতুন দিগন্ত
এই এআই ভগবদ গীতা (AI Bhagavad Gita) প্রচলিত বইয়ের মতো কেবল স্থির পাঠ্য নয়, বরং এটি একটি জীবন্ত কথোপকথক হিসেবে কাজ করবে। গীতার 'পাঠকরা' একই সাথে একজন কথোপকথকও হবেন, যারা দাসের কণ্ঠের সাথে জড়িত থাকবেন। প্রতিটি অধ্যায়ের আগে দাসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা শোনা যাবে, এবং পাঠকদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর - তা এক নজরে দেখে নেওয়া প্রশ্ন হোক বা গভীর চিন্তাভাবনা থেকে উদ্ভূত প্রশ্ন – এআই দ্বারা দাসের কণ্ঠে উত্তর দেওয়া হবে।
দাস এই প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, "তারা বলেছিল যে আপনি 'দ্য ডিফিকাল্টি অফ বিয়িং গুড' বইটিতে মহাভারতকে একবিংশ শতাব্দীতে নিয়ে এসেছেন। আমরা এখন চাই আপনি গীতার ক্ষেত্রেও একই কাজ করেন।" তিনি আরও যোগ করেন, "আমি চিন্তার খেলা খেলতে পছন্দ করি, আমার মনে হয় এগুলো আমাদের নৈতিক কল্পনাকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে।"
দাসের এই "চিন্তার খেলা" পরিচালনা করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বই (AI Bhagavad Gita) একটি আদর্শ পরিবেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এই শরৎকালে যখন দাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করবেন, তখন তাকে ১৫-২০ ঘন্টা ধরে একাধিক সাক্ষাৎকার দিতে হবে। গীতার প্রতিটি সম্ভাব্য দিক নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হবে, যাতে প্রকাশক অনুমান করতে পারে কোন অংশগুলি পাঠকের আগ্রহ জাগিয়ে তুলবে। এই সাক্ষাৎকারগুলিই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য ডাটাবেস তৈরি করবে।
প্রাচীন জ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়
ভগবদ গীতা এমন একটি পাঠ যা 'শান্তির প্রেরিত' মহাত্মা গান্ধী এবং 'যুদ্ধের প্রেরিত' হেনরিক হিমলার উভয়েই ব্যবহার করেছিলেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়নকারী দাসের মতে, তাঁরা দুজনেই প্রতিদিন গীতা বহন করতেন। দাস বলেন, "এখানে একটি লেখা দুটি ভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা হয়েছে। তারা হয়তো এটি পড়ে বলবে, 'এটা কীভাবে সম্ভব?' এমন কিছু কৌতূহলোদ্দীপক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে আমাকে।" এই প্রকল্প গীতাকে কেবল একটি বই হিসেবে না দেখে, এটিকে জীবন্ত এবং সম্ভাবনাময় করে তুলছে।
কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুসারে, রিবাইন্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে "একটি ইন্টারেক্টিভ বাইবেল" তৈরি করা। তারা পাঠকদের জন্য "পড়ার একটি নতুন উপায় অনুভব করার" দীর্ঘ প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসছে।
শিক্ষায় এআই-এর সম্ভাবনা
দাসের মতে, কিছু সতর্কতা বাদ দিলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অফুরন্ত সম্ভাবনার চাবিকাঠি ধারণ করে। তিনি বলেন, "ভারতে, শিক্ষা আমাদের দুর্বল দিকগুলির মধ্যে একটি। একজন শিক্ষকের অনেক ছাত্র থাকে, এবং প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা দক্ষতা থাকে। কিছু লোক পিছিয়ে পড়ে এবং তারা বুঝতে পারে না যে শিক্ষক ক্লাসে কী বলছেন। এআই প্রত্যেককে যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার জন্য একজন করে এআই সহকারী দিতে পারে।" এই উদাহরণটি এআই শিক্ষাক্ষেত্রে কী ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে, তার একটি চিত্র তুলে ধরে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊