ছত্তিশগড়ে ৫,০০০ গাছ কাটা: আদানি পরিচালিত কয়লাখনির জন্য বন উজাড়, প্রতিবাদে উত্তাল মুদাগাঁও

Adani Coal Mines | Chhattisgarh Deforestation | | Mudagaon Tree Cutting | Raigarh Environment Movement | | MAHAGENCO Coal Project | Gram Sabha Permission Debate |
Photo : social media

ছত্তিশগড়ের রায়গড় জেলার মুদাগাঁও ও সারাইটোলায় আদানি গোষ্ঠীর কয়লাখনি প্রকল্পের জন্য মাত্র দুই দিনে কাটা হয়েছে ৫,০০০-এর বেশি গাছ। পরিবেশবিদ ও স্থানীয়দের প্রতিবাদ সত্ত্বেও চলছে বন উজাড়।


মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় কাটা পড়ল ৫,০০০ গাছ

২০২৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুন, ছত্তিশগড়ের রায়গড় জেলার তামনার ব্লকের মুদাগাঁও ও সারাইটোলা গ্রামে গারে পালমা সেক্টর II কয়লাখনি প্রকল্পের জন্য কাটা হয়েছে অন্তত ৫,০০০ গাছ। এই খনি পরিচালনা করবে আদানি গোষ্ঠী, মহারাষ্ট্র স্টেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (MAHAGENCO)-এর জন্য।

প্রকল্পের পরিধি ও প্রভাব

  • ১৪টি গ্রাম সরাসরি এই প্রকল্পে প্রভাবিত হবে
  • ২,৫৮৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা হবে, যার মধ্যে ২১৫ হেক্টর বনভূমি
  • এলাকাটি ইতিমধ্যেই ছয়টি সক্রিয় কয়লাখনি দ্বারা পরিবেষ্টিত, আরও চারটি খনি অনুমোদনের অপেক্ষায়

পুলিশি নজরদারি ও গ্রেপ্তার

২৬ জুন সকাল থেকে শুরু হওয়া গাছ কাটার সময় ২,০০০-এর বেশি পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়।

  • ৭ জনকে (যার মধ্যে কংগ্রেস বিধায়ক বিদ্যাবতী সিদার ও লেখক-অ্যাক্টিভিস্ট রিঞ্চিন) অবৈধভাবে আটক করা হয়
  • স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মহুয়া ফুল সংগ্রহ করতে যাওয়া তিনজন মহিলাকেও আটক করা হয়

স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও আইনি লড়াই

  • গ্রামবাসীরা গ্রাম সভার অনুমতি ছাড়া গাছ কাটার অভিযোগ তুলেছেন
  • বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে ছত্তিশগড় হাইকোর্টন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (NGT)-এ
  • ২০২২ সালে পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিল হলেও ২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক পুনরায় অনুমোদন দেয়


খনিটি আদানি গ্রুপ কর্তৃক মহারাষ্ট্র স্টেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (MAHAGENCO) এর জন্য পরিচালিত হবে। যদিও খনিটি থেকে কমপক্ষে ৬৫৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা উৎপাদনের অনুমান করা হচ্ছে, তবুও ১৪টি গ্রাম এই প্রকল্পের দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হবে এবং এর জন্য প্রায় ২,৫৮৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

এর মধ্যে প্রায় ২১৫ হেক্টর বনভূমি যা গাছ এবং অন্য কোনও গাছপালা থেকে মুক্ত করা হবে। এই এলাকায় ইতিমধ্যেই আরও ছয়টি কয়লা খনি চালু রয়েছে এবং আরও চারটির কাজ চলছে।

দ্য ওয়্যার সূত্রে জানাগেছে, স্থানীয়রা জানিয়েছে, পুলিশ ২৬শে জুন সাতজনকে একদিনের জন্য অবৈধভাবে আটক করে । তারা আরও জানিয়েছে যে গাছ কাটার তদারকির জন্য ২৬শে জুন কমপক্ষে ২০০০ পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল; ২৭শে জুন মুদাগাঁও এবং সরাইটোলা গ্রামেও অভিযান অব্যাহত ছিল।

বন উজাড় এখনও অব্যাহত, যদিও বাসিন্দারা ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ করছেন এবং প্রকল্পের বিরুদ্ধে আবেদন করেছেন, যার সাথে সম্পর্কিত মামলাগুলি ছত্তিশগড় হাইকোর্ট এবং ভারতের সর্বোচ্চ সবুজ আদালত জাতীয় সবুজ ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) উভয় ক্ষেত্রেই শুনানি চলছে।

এই ঘটনা শুধু পরিবেশগত বিপর্যয় নয়, এটি স্থানীয় অধিকার, বনজীবন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার প্রশ্নও তুলে ধরছে। আদানি গোষ্ঠীর এই প্রকল্প ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা আগামী দিনে ভারতের পরিবেশ নীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।