শীতের ভাপা পিঠা’ বিক্রির ধুম পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়
জয়দীপ মৈত্র,দক্ষিণ দিনাজপুর:
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা । এই জেলার বিভিন্ন খাবারের সুনাম রয়েছে বরাবরই । খাবারের তালিকাটাও বেশ বড় । জনপ্রিয় খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে ক্ষীরের দই, নলেন গুড় আর নলেন গুড়ের তৈরি বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী । তবে কুয়াশা আচ্ছাদিত সকালে কিংবা হিমেল সন্ধ্যায় বাতাসে ভেসে আসা ভাপা পিঠার মন মাতানো গন্ধে নস্টালজিক হয়ে পড়েন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসী । গরম আর সুগন্ধি ঘ্রাণে মন আনচান করে ওঠে সবার। পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকাতেই শীতের আগমনী বাতার্য় ‘শীতের ভাপা পিঠা’ বিক্রির ধুম পড়েছে । শীত এলেই একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা সকাল-বিকাল এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত এ ব্যবসায় ব্যস্ত সময় কাটান।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পৌর শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে রাস্তার মোড়ের দোকানগুলিতে চলছে ঐতিহ্যবাহী ভাপা পিঠার তৈরির প্রক্রিয়া । এই পিঠার স্বাদে ক্রেতারা মুগ্ধ । শীতের সময় এখানকার নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভাপা পিঠার ব্যবসা ।
কুয়াশা ঢাকা সকাল ও সন্ধ্যাবেলায় গরম ভাপা পিঠার মজাই আলাদা। একদিকে ভাপা-পিঠার স্বাদ আর অন্যদিকে চুলার আগুন আর জলীয় বাষ্পের উত্তাপ যেন চাঙ্গা করে দেয় দেহমন। অনেকেই পিঠার দোকানে চুলার পাশে বসেই গরম পিঠা খাচ্ছেন। পরিবারের চাহিদা মেটাতে কেউ কেউ আবার পিঠা কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, অফিস, দোকান, ক্লাব, আড্ডাতেও এই পিঠার আয়োজন লক্ষ্য করা যায়।
শীতকালে শ্রমজীবী, রিকশাচালক, ড্রাইভার, শ্রমিকসহ অভিজাত পরিবারের লোকজনের কাছে প্রিয় শীতের এই পিঠা। প্রসঙ্গত, চালের গুঁড়োর সাথে আটা বা ময়দা মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠার মতো দেশী জাতের পিঠা। মাটির চুলায় খড়ি অথবা জ্বালানি গ্যাস পুড়িয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পযর্ন্ত পিঠা তৈরি ও বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। জেলার বিভিন স্থানে ভাপা পিঠার দোকানে সকাল-সন্ধ্যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লেগেই থাকে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের এক পিঠা ব্যবসায়ী হারান রায় জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে এ ব্যবসা চালাচ্ছেন তিনি। গরমে তিনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করলেও শীতের মরসুমে তিনি ভাপা পিঠা ও সেদ্ধ ডিম বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের অন্নসংস্থান করেন । সেই উপার্জনেই সুখে-শান্তিতে দিনযাপন করছেন।
জানা যায়,হারানবাবুর তৈরি পিঠার বেশ সুনাম রয়েছে এলাকায় । শিতের মরশুম শুরু হতেই তাঁর দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা । বিক্রিবাটা ভালোই হচ্ছে । প্রতি পিঠার মূল্য নিচ্ছেন পাঁচ ও দশ টাকা করে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০-৭০০ টাকার পিঠা বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভাপা পিঠা প্রস্তুতকারক হারান রায়।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊