কোচবিহারে UUPTWA এর তৃতীয় রাজ্য সম্মেলনে আওয়াজ উঠল 'Justice for R G Kar'
গৌতম সাহা,কোচবিহারঃ
বিগত এক মাস ধরে কোলকাতার আর জি কর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তারের সঙগে হওয়া পাশবিক ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে যখন রাজ্য তথা দেশ উত্তাল এমন এক আবহে কোচবিহারে বেনফিশের নহবতখানায় অনুষ্ঠিত হল এ রাজ্যের সর্ববৃহৎ প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারী টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোশিয়েশানের তৃতীয় বার্ষিক সম্মেলন।
১৫-১৬ ই সেপ্টেম্বর দুইদিন ব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। ২৪ টি জেলা থেকে আগত প্রায় ২৯০ জন প্রতিনিধিত্ত্বমূলক সদস্য- সদস্যাদের যোগদানের মাধ্যমে এই সম্মেলন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো। সম্মেলনের শুরুতে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোচবিহারের ঐতিহ্য ও রীতি অনুযায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব ও আগত প্রতিনিধিদের বরণ করা হয়। তারপর সভাপতিমণ্ডলী ও মিনিটস্ কমিটি গঠনের পর শোকপ্রস্তাব পাঠ হয়। এই মঞ্চে সদ্য প্রয়াত তিলোত্তমার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জেলা ভিত্তিক নেতৃত্ব প্রতিটি জেলার সংগঠনের গতিপ্রকৃতি ও আগামী পথ চলার বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠ করেন ও শেষে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অনেকগুলি প্রস্তাব এই সম্মেলনে গৃহীত হয়। সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন গভর্নিং বডি গঠনে এই সংগঠনই প্রথম দক্ষিন ভারত ভিত্তিক সংস্থার দ্বারা নির্বাচন সম্পন্ন করেন।
সংগঠনের সদস্যরা নিজস্ব আই ডি ও পাসওয়ার্ড এর মাধ্যমে অনলাইনে যেভাবে ১৭ জন গভর্নিং বডি সদস্য নির্বাচিত করলেন তা অভাবনীয় তথা ঐতিহাসিক। অন্যান্য বিভিন্ন সংগঠন তথা নির্বাচন কমিশন এই পদ্ধতি আগামীদিনে গ্রহণ করতেই পারেন। শিক্ষা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর স্বার্থে বিভিন্ন গঠনমূলক প্রস্তাব এই সম্মেলনে গৃহীত হয়।
এই সংগঠনই এ রাজ্যে সরকারী চাকরীরত শিক্ষক- শিক্ষকাদের জন্য অত্যন্ত কম প্রিমিয়ামে পারিবারের সকল সদস্যদের জন্য গ্রুপ মেডিক্লেম পলিসি নিয়ে আসেন। এই পলিসির সফলতা কে ভর করে অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনও এই পলিসির অনুকরণ শুরু করেছেন বলে জানা গেল নেতৃত্বের কাছ থেকে। হয়ত এটাই এই সংগঠনের বিশাল সফলতা কারণ নিত্য নতুন পথ দেখানোর শুরুটা এই সংগঠনই করে চলেছেন বলে জানালেন সংগঠনের সদ্য নির্বাচিত সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক- শিক্ষকদের নোশনাল বেতন প্রদানের জন্য হাইকোর্টে ধারাবাহিকভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এবং এই লড়াই যে কোন মূল্যে তারা জয় ছিনিয়ে আনবেন বলে জানালেন। এমনকি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতি তারা নিয়ে ফেলেছেন বলে জানা গেল।
প্রসঙগত উল্লেখযোগ্য ২০১৮ সালে আত্মপ্রকাশ করে গোটা রাজ্য জুড়ে বিশেষত সরকারের সর্বোচ্চ মহলে এক মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে এই সংগঠন কারণ শুধু প্রাথমিক শিক্ষকদের নায্য বেতন বা নায্য মহার্ঘভাতার দাবীতে এই সংগঠনের সীমাবদ্ধতা শেষ হয়ে যায়নি বরং বৃহত্তর সামাজিক প্রেক্ষাপটে রাজ্যের বৃহত্তর সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সৃষ্টি ও নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে চাকরী চুরি, সমস্ত শূন্যপদ পূরণ, নায্য বেতনের দাবী নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন ছাড়াও সম্প্রতি আর জি করে কর্মরত ডাক্তারের সঙগে হওয়া পাশবিক ধর্ষণ, হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে তাদের আন্দোলন যে প্রশাসনের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে তা বলাই বাহুল্য। ভাস্কর বাবু জানালেন শুধু নায্য দাবী বা দুর্নীতির বিরুদ্ধেই আন্দোলনেই তাদের সংগঠন সীমাবদ্ধ নয় বরং বৃক্ষ রোপন, রক্তদান কর্মসূচী,বস্ত্র বিতরণ বা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের অর্থ সাহায্যের মত বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে তারা এগিয়ে চলেছেন ও আগামীদিনে এগিয়ে চলবেন বলে তিনি ভীষণভাবে প্রত্যয়ী।
এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহারের গর্ব পদ্মশ্রী গীতা রায় বর্মন ও কোলকাতা হাইকোর্টের বিখ্যাত আইনজীবি বিক্রম ব্যানার্জী ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊