২১ বলে অর্ধশতরান বাংলার অভিষেকের, দুরন্ত দিল্লির কাছে হেরে কার্যত বিদায় লখনউয়ের

DC vs LSG


দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০৮-৪ (অভিষেক পোড়েল ৫৮, স্টাবস ৫৭)

লখনউ সুপার জায়ান্টস: ১৮৯-৯ (পুরান ৬১, আর্শাদ ৫৮)

দিল্লি ১৯ রানে জয়ী

মরণ-বাঁচন ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ১৯ রানে হারাল দিল্লি। একইসঙ্গে আইপিএল প্লে-অফের আশাও বাঁচিয়ে রাখল ঋষভ পন্থের দল। এই জয়ের ফলে তালিকায় পঞ্চম স্থানে দিল্লি। অন্যদিকে হারের ধারা অব্যাহত লোকেশ রাহুলদের। প্লে-অফ থেকে আরও অনেক দূরে তাঁরা। মাঠের উত্তাপ বদলে গিয়েছে হৃদ্যতায়। আগের ম্যাচে কে এল রাহুলকে মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা প্রকাশ্যেই বকাবকি করেছিলেন, অবশেষে তাঁকে বাড়িতে ডেকে নৈশভোজ করিয়েছেন। আলিঙ্গন করে বিবাদ মিটিয়ে নিয়েছেন। মালিক আর অধিনায়কের সমস্যা মিটলেও মাঠের ভিতরের সমস্যা এখনও মেটাতে পারল না লখনউ সুপার জায়ান্টস। মাঠের ব্যর্থতা সাফল্যে বদলাতে পারলেন না স্টয়নিস, পুরানরা। মঙ্গল রাতে দিল্লির কাছে হেরে আইপিএল থেকে বিদায় কার্যত নিশ্চিত করে ফেলল তারা।




মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রথম ভুলটা করলেন অধিনায়ক রাহুলই। টস জিতে ব্যাট করতে পাঠালেন দিল্লিকে। সিদ্ধান্তটা ফলপ্রসূ হয়নি। ঝড় তুললেন অভিষেক পোড়েল। ডেথ ওভারে ট্রিস্টান স্টাবসের ব্যাটে দেখা গেল সুনামি। মঙ্গলবার, ইনিংস শুরুতেই ধাক্কা খায় দিল্লি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আউট হন জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (০)। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ৯২ রান যোগ করে বড় ইনিংসের ভিত গড়ে দেন অভিষেক পোড়েল ও শাই হোপ। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারের পর স্কোর ছিল ৭৩-১। চলতি আসরের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে অভিষেক নেন মাত্র ২১ বল। তবে অর্ধশতরানের পর লখনউ স্পিনারদের দাপটে কিছুটা মন্থর হয়ে পড়েন তিনি। সেই সময় লেগস্পিনার রবি বিষ্ণোই (১-২৬) আঁটসাঁট বোলিংয়ে চাপে রাখেন ব্যাটারদের। সেই চাপ কাটাতে মারতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে ৫৮ রানে থামেন পোড়েল। বঙ্গ ওপেনারের ইনিংসে ছিল চারটি ছক্কা ও পাঁচটি বাউন্ডারি। ২৭ বলে হোপের সংগ্রহ ৩৮। ঋষভ পন্থ ২৩ বলে করেন ৩৩। তিনি মারেন পাঁচটি চার।




এরপরই কোটলায় রাজত্ব শুরু স্টাবসের। ২৫ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ২৩ বছর বয়সি প্রোটিয়া মারেন চারটি ছক্কা ও তিনটি বাউন্ডারি। ২২৮ স্ট্রাইক রেটের মালিক ইনিংসের বিরতিতে বলেন, শুরুতে তাড়াহুড়ো করতে চাইনি। ক্রিজে থিতু হওয়ার পর হাত খোলাই ছিল লক্ষ্য। সেটাই করেছি। শেষপর্যন্ত চার উইকেটে ২০৮ রানে থামে দিল্লির ইনিংস।



জবাবে প্রথম ওভারেই ফেরেন লখনউ অধিনায়ক। সময়টা মোটেও ভআলো যাচ্ছে না তাঁর। ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ রাহুল (৫)। তৃতীয় ওভারে আউট কুইন্টন ডি’কক (১২)। বিপজ্জনক নিকোলাস পুরানকে ফেরান মুকেশ কুমার। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের২৭ বলে ৬১ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ছ’টি চার ও চারটি বিশাল ছক্কা। পুরান বিগ হিটার। ক্রিজে জমে গেলে দিল্লির সমস্যা বাড়ত। আরশাদ খানের লড়াইও দাম পেল না (৫৮)। অভিজ্ঞ ইশান্ত শর্মা তিন উইকেট তুলে ভাঙলেন প্রতিপক্ষকে। লোকেশ রাহুল, কুইন্টন ডি’কক ও দীপক হুডাকে প্যাভিলেয়নে ফেরান এই স্পিডস্টার। তিনিই ম্যাচের সেরা।



এই ম্যাচে হারের পর আইপিএল থেকে বিদায় কার্যত নিশ্চিত লখনউয়ের। নিজেদের শেষ ম্যাচ জিতলেও তাঁরা পৌঁছবেন ১৪ পয়েন্টে। নেট রান রেটে অনেক পিছিয়ে কেএল রাহুলরা। ফলে তাঁদের নক আউটে খেলার সম্ভাবনা কার্যত শূন্য। এদিন জিতে দিল্লি ১৪ পয়েন্টে পৌঁছল বটে, কিন্তু তাঁদেরও নেট রান রেটের যা অবস্থা তাতে বিদায় কার্যত নিশ্চিত। অন্যদিকে এদিন দিল্লির জয়ে নক আউটে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেল রাজস্থানের।