বাবা ভোলানাথের টানে ভক্ত সমাগমের ভিড় লক্ষ্য করা গেল বীরভূমের বক্রেশ্বর ধামে
শ্রাবণ মাস পড়ার আগেই মানুষের মধ্যে উচ্ছাস ও উদ্দীপনা দেখা গেল চোখে পড়ার মতো। শিবের ভক্তরা বাবা ভোলানাথের টানে সুদূর বাগডোগরা থেকে এসে পৌঁছেছে বীরভূমের বক্রেশ্বর ধামে। গেরুয়া রঙের পোশাকে তারা যাত্রা শুরু করেছে বাবা ভোলানাথের দরবারে। আর আমরা সকলেই জানি একমাত্র বীরভূমের বক্রেশ্বর ধামে উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে যেখানে গরম জলের ঘাটও করে দেওয়া হয়েছে। তাই বীরভূমের বক্রেশ্বর ধামকে পুণ্যধামও বলা হয়ে থাকে।
কথিত আছে শ্রাবণ মাসের প্রথম দিন থেকেই ভগবান শিবের ভক্তদের মধ্যে একটি অদ্ভুত উৎসাহ সারা ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ছোট বড়ো মাঝামাঝি সমস্ত শিবক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে লক্ষ করা যায়। এর কারণ হিসেবে রয়েছে পৌরাণিক উপাখ্যান।আমরা সবাই জানি সমুদ্র মন্থনের ঘটনা একটি অন্যতম প্রধান পৌরাণিক ঘটনা। কথিত আছে যে সমুদ্র মন্থন করা হয়েছিল শ্রাবণ মাসে। মন্থন কালে ঐরাবত উচ্চৈশ্রবা প্রভৃতির সাথে সাথে যেসকল খারাপ জিনিস উঠে এসেছিল তার মধ্যে তীব্র বিষ হলাহল হল সবচেয়ে ভয়ানক। দেবতাদের মতে ঐ ভয়ানক বিষ সমস্ত পৃথিবীর জীবকুলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারতো।এমতাবস্থায় সবাই দ্বারস্থ হলেন দেবাদিদেব শিবের।শিব যে অবস্থায় ছিলেন সেই অবস্থায় তৎক্ষণাৎ হলাহল পান করতে উদ্যত হলে ঐ বিষের প্রভাবে যখন কাতর হয়ে পড়লেন তখন মহাদেবী পার্বতী শিবের গলার মধ্যে প্রবেশ করলেন এবং শিবের কাতরতা দূর করলেন। তীব্র বিষ তার কন্ঠে প্রবেশ করার জন্য শিবের কন্ঠ নীল হয়ে উঠলো। ঐ কারণে শিবের অপর নাম নীলকন্ঠ । তখন অন্যান্য দেবতাবৃন্দ দেবাদিদেব শিবের সুস্থতা র জন্য গঙ্গার জল নিয়ে তাঁর অঙ্গ সিঞ্চিত করতে লাগলেন।ঐ পৌরাণিক উপাখ্যান দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এখনও শিবের ভক্তরা শ্রাবণ মাসে শিবলিঙ্গের উপর বিভিন্ন উপাচার সহ গঙ্গার জল বা অন্য কোন পবিত্র উৎস থেকে জল নিয়ে ঢালে।
কারণ, দেবাদিদেব শিব ছাড়া আর অন্য কারো সাধ্য ছিল না ঐ তীব্র হলাহলের থেকে জীবকূল কে রক্ষা করার।দেবাদিদেব শিবের ভক্তগণ বিশ্বাস করেন যে জলের প্রভাবে দেবাদিদেব সুস্থ ও প্রসন্ন বোধ করেন আর তিনি প্রসন্ন হলে সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত সকল জীবকূল রক্ষা পায়। তাই বাবা ভোলানাথের দরবারে প্রতি বছরই অগণিত ভক্তরা বীরভূমের বক্রেশ্বরে আগমন ঘটায়।
0 মন্তব্যসমূহ
thanks