রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের মাঝেও ইমাম-মোয়াজ্জেম ও পুরোহিত ভাতা বৃদ্ধি মমতার




mamata



দাবি মেনে ইমাম ও মোয়াজ্জেম ভাতা বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দু’ক্ষেত্রেই ৫০০ টাকা ভাতাবৃদ্ধির ঘোষণা করেন তিনি। সমপরিমাণ ভাতা বাড়ল পুরোহিতদেরও। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সভায় যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের অর্থকষ্টের কথা স্বীকার করেও ভাতাবৃদ্ধির ঘোষণা করলেন তিনি।


রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলে পরই ইমাম-মোয়াজ্জেমদের জন্য বোর্ড গঠন করেছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সেই সময় থেকে ইমাম-মোয়াজ্জেমদের জন্য মাসিক ভাতা চালু করেছিলেন। তারপর দীর্ঘ ১০-১১ বছর কেটে গেলেও মাসিক ভাতা বাড়েনি। অথচ দ্রব্যমূল্য় বেড়েছে অনেকটাই, ভাতাবৃদ্ধির দাবির পক্ষে এই যুক্তিই পেশ করেছেন ইমাম-মোয়াজ্জেমরা। সেই দাবিই মেনেই এবার ভাতার পরিমাণ বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। এতদিন ইমামরা মাসে ২৫০০ টাকা করে ভাতা পেতেন। সেই পরিমাণ বেড়ে হল ৩ হাজার টাকা। আর মোয়াজ্জেমরা পেতেন মাসে ১ হাজার টাকা। সেটা বেড়ে হল ১ হাজার ৫০০ টাকা। সমপরিমাণ ভাতা বেড়েছে পুরোহিতদেরও।


mamata


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন- "আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মুয়াজ্জিন সমাবেশে বক্তব্য রাখতে পেরে হৃদয় আমার উৎফুল্ল হয়ে উঠেছে। আজকের সমাবেশে আগত সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ। আজকের এই সমাজের অস্থির সময়ে বাংলা একমাত্র রাজ্য যেখানে সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের আদর্শকে সর্বদা মেনে চলা হয়। আমরা ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, স্বামী বিবেকানন্দের হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী। যে ধর্ম দাঙ্গা-বিভেদে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে সম্প্রীতি-সৌভ্রাতৃত্বে - সেই ধর্মই আমাদের পথচলার সঙ্গী।"

mamata


তিনি আরও বলেন- "আমি গর্বিত কারণ, ভারতবর্ষে সংখ্যালঘু স্কলারশিপ প্রদানে বাংলা এক নম্বর। রাজ্যে ৬০৫টি সংখ্যালঘু হোস্টেল তৈরি করা হয়েছে যার মধ্যে ৪৩৩টি ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। হোস্টেলে থাকা প্রত্যেকটি ছাত্রকে ১০ হাজার টাকা মেইনটেনেন্স ভাতা প্রদান করা হয়। সংখ্যালঘু এলাকায় ৩৯টি আইটিআই, ৮টি পলিটেকনিক কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে যার মধ্যে ২৭টি আইটিআই এবং ৫টি পলিটেকনিক কলেজ চালু হয়েছে। ৬১৪টি মাদ্রাসায় ৬,১৫২ জন শিক্ষক এবং ৪৩৩ জন অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। আরো ৪,৭০০ জন শিক্ষক এবং ১,০০০-এর বেশি অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রায় ৫৫১ কোটি টাকা দিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়েছে। উর্দু ভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। শেষ ১২ বছরে ৩৬,০০০ সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ২৪৬ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের বাড়ি মানোন্নয়নের জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এছাড়াও, বাংলার জনকল্যাণমূলক প্রকল্প যথা: কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্য সাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড-সহ বিভিন্ন প্রকল্প জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য প্রযোজ্য। পাশাপাশি, আজকের এই বিশেষ দিনে, ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং পুরোহিতদের ভাতা ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে দিলাম।"