TMC ব্লক ও অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দল ছাড়লেন জেলা সম্পাদক সহ ৪০ জন
সঞ্জিত কুড়ি পূর্ব বর্ধমান:-
তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি এবং অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির সম্পাদক পদ সহ প্রায় ৪০ জন সক্রিয় কর্মী নিজেদের সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিলেন। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় বর্ধমান ১নং ব্লকের বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিঙুটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো।
মঙ্গলবার রীতিমত সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘোষণা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির সম্পাদক অভিজিত সোম। এদিন ঝিঙুটি পার্টি অফিসের সামনে এই সাংবাদিক বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এই পার্টি অফিসকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় জমির মালিকের হাতে। একইসঙ্গে পার্টি অফিসে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র স্থানীয় দুটি ক্লাব এবং স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে দান করে দেওয়া হল।
এদিন অভিজিত সোম জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর ঝিঙুটি গ্রাম সংসদে ১৯৯৮ সালে প্রথম তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করে। তাঁরা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনেই দলের কাজ করছিলেন। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তাঁদের কোনো গুরুত্বই দেয়নি দল। এমনকি দলের কোনো কাজেই তাঁদের ডাকা হচ্ছে না। আর তাই তাঁরা তৃণমূলের সমস্ত সক্রিয় পদ ছাড়লেন। পরিবর্তে তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ ভোটার হিসাবে থাকলেন।
এদিকে,পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গেছে, বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন এই ঝিঙুটি গ্রাম ছাড়াও পঞ্চায়েতের ২৩টি সদস্যের মধ্যে ১৯জন সদস্যই এবার টিকিট পাননি। এমনকি বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জাহানারা খাতুনও টিকিট পাননি। আর এরপরেই গত ১৭ জুন অভিজিত সোম এবং জাহানারা খাতুন উভয়েই তৃণমূলের সক্রিয় পদ ছাড়তে চেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন।
যদিও এদিন অভিজিত সোম জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করার চিঠি পাঠালেও তা গৃহিত হয়েছে কিনা তা তাঁকে জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, অভিজিত সোম কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসেন। এদিন এই ঘটনা সম্পর্কে বর্ধমান ১নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী কাকলী তা গুপ্ত জানিয়েছেন, অভিজিত সোম কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসেছিলেন তাঁর আবেদনেই। কিন্তু তারপর থেকে তিনি বা বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেউই ব্লক নেতৃত্ব বা অঞ্চল নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেননি। ব্লক বা অঞ্চলের বৈঠকেও তাঁরা আসতেন না। এমনকি শেষ ৫বছরে বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জাহানারা খাতুন তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থনে কোনো কাজই করেননি। বরং সিপিএমের হয়ে কার্যত কাজ করছিলেন।
উল্লেখ্য, জাহানারা খাতুন নবাবহাট এলাকার দাপুটে এক সিপিআইএম নেতার ভাইঝিও। এদিন কাকলী তা গুপ্ত জানিয়েছেন, দলের কাছে এঁদের বিষয়ে রিপোর্ট ছিল। সেজন্যই হয়ত তাদের টিকিট দেওয়া হয়নি। এমনকি তাঁরা অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে এনিয়ে কোনো আলোচনাও করেননি। এরই পাশাপাশি কাকলীদেবী জানিয়েছেন, অভিজিতবাবু ১নং ব্লকের থেকে শহরে রাজনীতিই বেশি করেছেন। এদিন তাঁরা যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। এতে দলের কোনো ক্ষতি হবে না।
অপরদিকে, এদিন ঝিঙুটি ওই তৃণমূল পার্টি অফিসের মূল মালিক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠী তাঁকে ওই ঘর থেকে তৃণমূলের পার্টি তুলে দেবার জন্য হুমকি দিচ্ছিল। এরপরই তিনি অভিজিত সোমকে তাঁর ঘর ছেড়ে দেবার জন্য বলেন। তাপসবাবু জানিয়েছেন, ওদের মধ্যে কি দ্বন্দ্ব আছে তা তিনি জানেন না। তিনি কোনো ঝামেলায় জড়াতে চান না, তাই ঘর ছেড়ে দিতে বলেছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊