অবশেষে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শাহলিন সাজিদ বাড়ি ফিরল
অবশেষে ইউক্রেন থেকে আসানসোলের রেলপারের ওকে রোডে বাড়ি ফিরলো শাহলিন সাজিদ। রবিবার একেবারে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শাহলিন সাজিদ বাড়ি ফিরল।
এদিন বাজনা সহকারে এবং পুষ্প বর্ষণ করে ইউক্রেন ফেরত শাহলীন সাজিদকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাড়ি ফিরে কেক কাটলেন ইউক্রেন ফেরত শাহলীন সাজিদ। বাড়ি ফেরায় স্বস্তিতে পরিবারের সদস্যরা।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শাহলীন সাজিদের পরিবারের সদস্যরা। জানা গিয়েছে এদিন দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে অন্ডাল বিমানবন্দরে নামে শাহলীন সাজিদ। এরপর গাড়ি করে রেলপারের ওকে রোডে বাড়ি পৌচ্ছায়।
পরিস্থিতি ঠিক হলে ফের ইউক্রেন যাবেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেন ফেরত শাহলীন সাজিদ। এই প্রসঙ্গে ইউক্রেন ফেরত ভারতীয় ছাত্রী সালহীন আসানসোলে সাংবাদিকদের কাছে জানায় যে "আমি খারপিসে ছিলাম যেখানে গোলাগুলি বম্বিং শুরু হয়েছিল, কোন রকম করে সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে কুড়ি কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বর্ডারের কাছে এসে পৌঁছায় সেখানেও পুলিশ আমাদেরকে ট্রেনে উঠতে দিচ্ছিল। না যাই হোক কোন রকম ভাবে আমি বর্ডারে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে আমরা দেশে ফিরে আসি । তবে নিজের দেশে ও বাড়ি আসতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে।
তিনি আরও বলেন যে খারপিসের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল, সব সময় বোমার গুলির আওয়াজ পাচ্ছিলাম খুব আতঙ্কের মধ্যেই কাটাচ্ছিলাম প্রত্যেকটা দিন ওখানে খাবার জল থেকে শুরু করে খাবার পর্যন্ত শেষ হয়ে গিয়েছিল, দোকানেও কিছু পাচ্ছিলাম না। যেটুকু ছিল সেটুকু মধ্যেই কোনরকম করে দিন কাটাচ্ছিলাম আমার সঙ্গে আরো ২৫ জন পড়ুয়া ছিল।
তবে ওখানে ভারতীয় অনেক ছাত্ররাই ছিলও, খুব আতঙ্কের মধ্যেই আমরা ছিলাম। টাকা-পয়সার অনেক অসুবিধা হচ্ছিল কোনো ট্রানজেকশন হচ্ছিল না। তবে ওখানের এজেন্সিরা আমাদের অনেক সাহায্য করেছে ।যদি আবার সুযোগ থাকে ডাক্তারি পড়ার আবার ইউক্রেনে যাব।
শাহলীন সাজিদের বাবা মহম্মদ সাজিদ আখতার বলেন যুদ্ধের খবর যখন থেকে পেয়েছি তখন থেকে আমাদের ঘরের সমস্ত ফ্যামিলি উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছিল যত তাড়াতাড়ি আমার মেয়ে যাতে ঘরে ফিরে আসুক আমরা ভারতীয় এম্বেসির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। ওখানে ডাক্তার মুজাফফর হোসেন ছিলেন, উনি আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। এছাড়াও আসানসোল ডিএম অফিসের যে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল সেখানেও আমার মেয়ের নাম নথিভুক্ত করায় এবং আমাদের মন্ত্রী তথা আমাদের দাদা মলয় ঘটক আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন ডাইরেক্ট আমার মেয়ের নাম নথিভুক্ত করে নবান্নতে পাঠিয়েছেন। আজ আমার মেয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে খুবই ভালো লাগছে। ভারত সরকার এবং রাজ্য সরকার সবাইকে আমি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই যে নির্বিঘ্নে আমার মেয়ে আজ বাড়ি ফিরে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ২৭ শে ফেব্রুয়ারি একটা ভিডিও পাঠিয়েছিল সালহীন। মাত্র ৬ সেকেন্ডের একটা ভিডিও তে বোঝা যাচ্ছিলো কতো ভয়ংকর পরিস্থিতি এখন ইউক্রেনে। ভিডিওটি পাঠিয়েছিলো আসানসোলের ছাত্রী সালহীন। যে মেডিকেল পড়ার জন্য ইউক্রেনে ছিলো।
কিন্তু ইউক্রেন তো অনেক দূর, চলছে মহাযুদ্ধ আর ভিডিও টি যেদিন পাঠিয়েছিল সেদিন ছিলো মহাযুদ্ধের চতুর্থ দিন। আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের ওকে রোড এলাকার বাসিন্দা সাজিদ আক্তারের মেয়ে সালহীন সাজিদ ইউক্রেনে মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে আটকে পড়েছিলো ।মেডিকেলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সালহীন ছিলো সেখানে হোস্টেলে ,যুদ্ধ পরিস্থিতি তে চিন্তায় ছিলো তার পরিবার।
সঠিক ভাবে যোগাযোগ করতে পারছিলো না মেয়ের সাথে,পরিবারের পক্ষ থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল সালহীনের বাবা সাজিদ আক্তার।
সালহীন জানিয়েছিলো দিনের বেলা ফ্ল্যাটে থাকলেও রাতের আশ্রয় বাঙ্কার বা মেট্রো তে। তাও আবার অনেক ভিড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গাদাগাদি করে অনেকেই রয়েছে প্রাণ বাঁচাতে।
অবশেষে বাড়ি ফিরলেন শাহলীন সাজিদ আর তার জন্য স্বস্তিতে পরিবারের সদস্যরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊