ট্রাইসাইকেলের অভাব বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিবন্ধী বহরদ্বীপ বর্মনের


মধুসূদন রায় , ময়নাগুড়ি :


ট্রাইসাইকেল না থাকায় প্রাইভেট টিউশন যেতে পারছেন না নবম শ্রেণীর এক ছাত্র বহরদ্বীপ বর্মন। বর্তমানে স্কুল বন্ধ কিন্তু স্কুল খুললে কি করে স্কুলে পৌঁছাতে পারবে, সে বিষয়ে একপ্রকার নিরাশ অসহায় বহরদ্বীপ ও তার পরিবার। এই পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে সক্ষম ছেলের জন্য ট্রাইসাইকেলের আবেদন পেশায় দিনমজুর বহর দ্বীপের মা জয়ন্তী বর্মনের। 


জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি থানার সাপ্টিবাড়ী-২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের গুয়াবাড়ী এলাকার বাসিন্দা জয়ন্তী বর্মন । স্বামীর মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর হয়েছে। পরিবারের সদস্য বলতে তিন ছেলে মেয়ে সহ মোট ৪ জনকে নিয়ে তার সংসার। স্বামীর মৃত্যুর পর দিনমজুরির কাজ করে আর্থিক অনটনের মধ্যেও সংসারের হাল ধরতে হয়েছে নিজেকেই। তার উপরে পরিবারের বড় ছেলে বহর দ্বীপ শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার হাত-পা কোমর অসাড়। নেই চলাফেরার শক্তি। ট্রাইসাইকেল বা অন্যের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পাড়া অসাধ্য বহর দ্বীপের কাছে। তাই প্রতিদিন ছেলের শিরদাঁড়া হয়ে অসাধ্য সাধন করতে হয় মা জয়ন্তি দেবী কে। একদিকে তিন ছেলে মেয়ের শিক্ষার খরচ এবং ভরণপোষণের অর্থ যোগাতে ছুটতে হয় কাজে। অন্যদিকে বহর দ্বীপের চলাফেরার জন্য ট্রাইসাইকেল না থাকায় সারাদিন এক জায়গায় চেয়ারে বসে কাটাতে হয়। 



জানা যায় তার একটি পুরনো ট্রাইসাইকেল ছিল কিন্তু ছয় মাস আগে সেটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। তারপর থেকেই ছেলেকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন জয়ন্তি দেবী। চলাফেরার একমাত্র অবলম্বন তার এই ট্রাইসাইকেল টি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তার চলার পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তাই প্রাইভেট টিউশন থেকে শুরু করে বাড়ির আশেপাশে ঘোরাঘুরি এখন বড়‌ই অতীত তার কাছে। টিউশনির পাঠ নিতে না পারায় পিছিয়ে পড়ছে বলে আক্ষেপ নবম শ্রেণীর এই পড়ুয়ার। প্রতিবন্ধী শংসাপত্র থাকলেও প্রতিবন্ধী ভাতা পায় না বহরদ্বীপ। অভাব-অনটনের এই সংসারে তার চলার সম্বল ট্রাইসাইকেল মিলবে কি করে? এই প্রশ্নই এখন জোরালো প্রতিবন্ধী বহরদ্বীপ ও তার মায়ের মনে!