চতুর্থ দফায় লক ডাউনের শেষদিন তথা ৩১শে মে রবিবার 'মন কি বাত'-এ ভাষণ দেওয়ার সময় আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি, এদিন তিনি করোনা পরিস্থিতি, আম্ফান নিয়েও বক্তব্য রাখেন। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়ে তিনি দাবি করেন, এই প্রকল্প থাকার জন্য ১৪০০০ কোটি টাকা বেচে গেছে গরিবদের।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি, যা বিশ্বের বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্যপ্রকল্প বলে দাবি করা হয়। সেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আমাদের দেশে দশকের পর দশক ধরে গরিব মানুষরা এটা ভেবে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে কী হবে? তাঁরা রুটি-রুজির ব্যবস্থা করবেন, না চিকিৎসার খরচ জোগাবেন? তাঁদের এই দুর্দশার কথা ভেবেই দেড় বছর আগে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করা হয়। কয়েকদিন আগেই এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। এক কোটি রোগীর অর্থ আমাদের দেশের এক কোটিরও বেশি পরিবার উপকৃত হয়েছে। এক কোটি রোগী মানে কি জানেন? এত স্বল্প সময়ের মধ্যে দু’টি করে সিঙ্গাপুর ও নরওয়ের মোট জনসংখ্যার বেশি মানুষের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের দেশের গরিব মানুষকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেও চিকিৎসার খরচ দিতে হত, তাঁরা যদি বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ না পেতেন, তাহলে তাঁদের পকেট থেকে ১৪,০০০ কোটি টাকা দিতে হত। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প গরিবদের এত টাকা বাঁচিয়েছে। এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মীদেরও অভিনন্দন জানাতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, দেশের সর্বত্র একইরকম চিকিৎসা পাওয়া যায়। বিহারের একজন ব্যক্তি তাঁর নিজের রাজ্যে যে চিকিৎসা পেতে পারতেন, কর্ণাটকেও সেটা পাবেন। একইভাবে মহারাষ্ট্রের একজন দুঃস্থ ব্যক্তি তামিলনাড়ুতে গিয়েও চিকিৎসা পাবেন। যে এক কোটি মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের ৮০ শতাংশই গ্রামীণ অঞ্চলের। ৫০ শতাংশ আমাদের মা, বোন, মেয়ে। বেশিরভাগ অসুস্থ ব্যক্তির অসুখই সাধারণ ওষুধে সারত না। ৭০ শতাংশ ব্যক্তিরই অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এটা থেকেই আপনারা আন্দাজ করতে পারেন, কত মানুষ সমস্যামুক্ত হয়েছেন।’
এদিন আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়ে বলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মণিপুরের একটি শিশুর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘চুরা-চাঁদপুরের ৬ বছরের শিশু কেলানসাং আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ফলে নতুন জীবন লাভ করেছে। এই বয়সেই তার মস্তিষ্কের কঠিন অসুখ হয়েছিল। তার বাবা একজন দিনমজুর এবং মা তাঁতি। তাঁদের পক্ষে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করা সম্ভব ছিল না। তবে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ফলে তাঁদের ছেলে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে।’
এর আগে, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে জানিয়ে টুইট করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, "এটি প্রত্যেক ভারতীয়কে গর্বিত করে তুলবে যে আয়ুষ্মান ভারত উপকারভোগীর সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়েছে। দুই বছরেরও কম সময়ে, এই উদ্যোগ এতগুলি জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আমি সকল সুবিধাভোগী এবং তাদের পরিবারকে অভিনন্দন জানাই। আমি তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্যও দোয়া করি।"
এই প্রকল্পের এক কোটিতম সুবিধাভোগী মেঘালয়ের পূজা থাপা। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন মোদি। সেই কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ট্যুইটারে শেয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পূজার সাথে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি ও এই প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊