দীর্ঘ সাত বছর তিন মাস পর অপেক্ষার অবসান। অবশেষে, সাজা পেল নির্ভয়ার গণধর্ষণ ও খুন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া চারজনের। মধ্যরাতের ক্ষমা ভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর আজ ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিহার জেলে ফাঁসিতে ঝোলানো হল পবন গুপ্তা, মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর ও বিনয় শর্মা চার দোষীকে। 

সালটা ২০১২। ১৬ই ডিসেম্বর মধ‍্যরাতে চলন্ত বাসে প‍্যারামেডিকেল ছাত্রী নির্ভয়া গণধর্ষনের শিকার হয়। এক নাবালকসহ ছয় জন নারকীয় অত‍্যাচার চালায় নির্ভয়ার ওপর। দোষীদের শাস্তিতে সরব হয় সারা দেশ। 

তবে নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের ফাঁসি নিয়ে শেষমুহূর্ত পর্যন্ত চলল নাটক। প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় ৪ দোষী। রাত আড়াইটেয় আদালতে দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি আর ভানুমতী, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এএস বোপান্নার বেঞ্চ প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে। ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে আগেই। বারবার এক বিষয়ে আদালতের কাছে উত্থাপন করা যায় না এই মর্মে দোষীদের প্রাণভিক্ষার শেষ আবেদন খারিজ করে দেয় ৩ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুসারেই ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে সাজা কার্যকর করা হল। ভোর ৫টায় নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে শারিরীক পরীক্ষা করা হয় । তারপর ভোর সাড়ে ৫টায় দিল্লির তিহাড় জেলে ফাঁসি দেওয়া হয় ৪ দোষীকে। নির্দিষ্ট সময় পর তিহাড় জেলের ডিরেক্টর সন্দীপ গোয়েল ৪ জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পবন জল্লাদই ফাঁসি দিলেন এই চার দোষীকে। দেশে প্রথম এই একসঙ্গে চার জনের ফাঁসির ঘটনা ঘটল। ফাঁসির আগে যাতে দোষীরা আত্মহননের চেষ্টা না করে, তার জন্য কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছিল তাদের। ফাঁসির পর তাদের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে। তারপর তাদের দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।

নির্ভয়ার পরিবারের কথায়, গোটা দেশের নির্যাতিত   মেয়ে বিচার পেল। ধর্ষকের পরিণতি কী হতে পারে, সেটাই দেখল এ দেশ।