গত ১১ই নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ থেকে কলকাতার বিকাশ ভবনের সামনে রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের অবস্থান এবং ১৫ই নভেম্বর থেকে আমরন অনশনে বসেছিলেন। গত ১১ই ডিসেম্বর,২০১৯ এ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পার্শ্ব শিক্ষকদের সংগঠনের সাথে তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে কলকাতার বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সদর্থক আলোচনা হয়েছিল। সেই দাবি করেছিলেন বৈঠকে উপস্থিত পার্শ্ব শিক্ষকদের সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরদিনই ১২ই ডিসেম্বর পার্শ্ব শিক্ষকরা তাদের ৩২দিনের অবস্থান ও ২৮দিনের অনশন আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পার্শ্ব শিক্ষক সংগঠনগুলির যে সদর্থক আলোচনা হয়েছিল তার ইঙ্গিত মিলেছে সংগঠনের পর থেকে।

বৈঠক শেষে পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহবায়ক শিক্ষক ভগীরথ ঘোষ জানিয়েছিলেন, "শিক্ষামন্ত্রীর সাথে তাদের সদর্থক আলোচনা হয়েছে। তার জন্য আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারকে তিন মাস সময় দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছি। আমরা আশাবাদী, শিক্ষামন্ত্রী আমাদের দাবিগুলো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। দাবিগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করবেন এবং নতুন বছরের মার্চ মাসের মধ্যে আমরা একটা ভালো খবর আশা করছি।" সাথে তিনি আরও বলেছিলেন "তিন মাসের মধ্যে যদি রাজ্য সরকার আমাদের দাবি না পূর্ণ করেন তাহলে আমরা আবার আন্দোলনের পথে যাব। আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করিনি। তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছি।"

তিনমাসের মধ্যেই আজ বেতন কাঠামো ঘোষণা না হলেও  বিজ্ঞপ্তি জারি করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষাকেন্দ্রে ইনিভিজিলেটরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভেনু সুপারভাইজারদের নির্দেশ দেওয়া হয় এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পার্শ্বশিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। 


বর্তমানে প্রায় ৪৮,০০০ কর্মরত আছেন, কিন্তু প্রায় ১৫ বছরের অধিকাল কাজে নিযুক্ত থাকার পরও NCTE rule অনুযায়ী পার্শ শিক্ষকরা সকলেই উপযুক্ত যােগ্যতা (ডি.এল.এড.) অর্জন করলেও এখনও পর্যন্ত তাদের পূর্ণ শিক্ষকের মর্যাদা প্রদান করা হয় না, পারিশ্রমিক বা ভাতা প্রদান করা হয়। অথচ, PAB (Project Approval Board) এ বেতন কাঠামাের উল্লেখ থাকলেও তা প্রদান করার ব্যবস্থা এখনাে পর্যন্ত শিক্ষা দফতর গ্রহণ করেনি। 

এছাড়াও বেশ কিছু সুযােগ সুবিধা থেকেও পার্শ্বশিক্ষকরা বঞ্চিত বলে ঐক্যমঞ্চের পক্ষথেকে জানানো হয়েছে। তারা পারিশ্রমিক হিসাবে যা পান,তা বর্তমানে মূল্য সূচকের অনেক নীচে। তার দ্বারা জীবন নির্বাহ করা সম্ভব নয়। এর ফলে গত ৩-৪ বছরে শতাধিক পার্শ্ব শিক্ষক শিক্ষিকা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন, নয়ত দরিদ্র্যের সঙ্গে লড়াইয়ে হার মেনে আত্মহত্যা করেছেন বলেও সংগঠন সূত্রের খবর।

এরই মাঝে বেতন কাঠামো ঠিক না করে নতুন দায়িত্ব দেওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের একাংশে ।

আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন