সংবাদ একলব্যঃ
বেতন কমিশনের হিসাব বলছে, যদি কোনও সরকারি কর্মীর বেতন যদি ১০০ টাকা ধরা হয়, তাহলে তার উপর ১২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা মিলবে৷ অর্থাৎ দু’টি মিলিয়ে ২২৫ টাকা হবে৷ আর কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ওই ২২৫ টাকার ওপর আরও ১৪.২ শতাংশ হারে বাড়বে মূল বেতন৷ ফলে, মূল বেতন দাঁড়াবে ২৫৭ টাকার কাছাকাছি৷ মূল বেতন যদি বাড়ে, সেক্ষেত্রে হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স অনেকটাই বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে৷ যদিও হাউস রেন্ট কত হবে তা মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দায়িত্বে রেখেছেন৷ জানিয়েছেন, তিনি তা পরে জানিয়ে দেবেন৷
সরকারের বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে বলেও জানা গিয়েছে৷ তার ওপর সরকারি কোষাগারে অর্থের অভাব।
তবে, স্যাটের নির্দেশ অনুযায়ী ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালুর আগে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দিতে হবে৷
কেন্দ্রের হারে দিতে হবে মহার্ঘ ভাতা৷ আদেও কি প্রস্তুত?
তবে, বেতন কমিশন কার্যকর করা আগে যদি রাজ্য সরকার মহার্ঘ ভাতা মামলার স্যাটের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে কী হবে? এই নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা৷
২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই নতুন কাঠামো অনুযায়ী কর্মীরা বেতন পাবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান। সে ঘোষণায় ফেডারেশনের সদস্যরা উল্লাস প্রকাশ করেন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ধন্দও তৈরি হয় খানিকটা। নতুন হারে বেতন যে দিন থেকেই হাতে পাওয়া যাক, এই নতুন হারকে কার্যকর হিসেবে ধরা হবে কবে থেকে, সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও কথা এ দিন বলেননি। নিয়ম অনুযায়ী বেতন কমিশন যে দিন থেকে কাজ শুরু করেছিল, সেই দিন থেকেই এই নতুন বেতন কাঠামোকে কার্যকরী হিসেবে ধরতে হবে। তা যদি ধরা হয়, তা হলে নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী গত প্রায় চার বছরে কর্মীদের যত টাকা বকেয়া হয়েছে, সেটাও সরকারের মিটিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু সেই বকেয়া বা এরিয়ার আদৌ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন একটি শব্দও খরচ করেননি। ফলে ধন্দে পড়ে যান নেতাজি ইনডোরে হাজির সরকারি কর্মীরা। বকেয়া কি একটুও মিলবে? নাকি একেবারেই মিলবে না? গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় সভা শেষ হতেই।
তৃণমূলের কর্মী সংগঠন স্বাভাবিক কারণেই স্বাগত জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণাকে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের মেন্টর গ্রুপের আহ্বায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যের সরকারি কর্মীরা অনেক দিন ধরে বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার তথা নতুন বেতন কাঠামো ঘোষিত হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ঘোষণাটা করে দিলেন। বেতন বৃদ্ধির কথাটা তিনি জানিয়ে দিলেন। কর্মীরা অবশ্যই খুশি।’’ তবে বকেয়া বেতনটাও মিটিয়ে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু না বলায় মনোজ চক্রবর্তীও হতাশ। তাঁর কথায়, ‘‘বর্ধিত বেতন অনুযায়ী যে টাকা গত চার বছরে বকেয়া হয়, তা হয়তো কর্মীরা পাবেন না। কর্মীদের সেই হতাশার বিষয়টাও সরকারের । সঙ্গে ভাবা উচিতঅবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কথাও।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে এ দিন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে সিপিএমের সরকারি কর্মী সংগঠন কোঅর্ডিনেশন কমিটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘এ রকম ঘটনা আমরা অতীতে দেখিনি। সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো কী হবে, বেতন কমিশন সে বিষয়ে কী সুপারিশ করল, সে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী কোথায় দাঁড়িয়ে করছেন? নিজের দলের কর্মী সগঠনের সভায়! এটা চলতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক এবং প্রশাসনিক রীতিনীতির পরিপন্থী। গণতন্ত্রে এ রকম হয় না।’’ বকেয়া টাকা মেটানোর বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও শব্দ খরচ না করায় কর্মীদের মধ্যে প্রবল অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলে বিজয়শঙ্করের দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘কর্মীদের মধ্যে মারাত্মক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আগামী সোমবার সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে সরকারি কর্মীদের বিক্ষোভ হবে।’’
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊