মধুসূদন রায়, ময়নাগুড়ি, ১৫ই সেপ্টেম্বর : আজ ২৭ ভাদ্র রবিবার  জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের ময়নাগুড়ি নগরের শহীদগড় স্কুল পাড়া সার্বজনীন দূর্গা পূজা কমিটি দেবী দূর্গা ত্রি-নয়না মাতার পূজোর প্যান্ডেলের খুঁটি পূজো সম্পূর্ণ করলো। রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো ময়নাগুড়ি ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলেও জোর কদমে চলছে দূর্গা পূজার প্রস্তুতি।
বারো মাসে তেরো পার্বণ কথাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য  প্রচলিত থাকলেও শারদীয়া বা দূর্গা পূজাই বেশি আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে পালন করা হয় দুর্গোৎসব । দূর্গা পূজা  হিন্দুদের সবচেয়ে বড়ো উৎসব বলে পরিচিত।
দেবী দূর্গা হলেন শক্তির রূপ, তিনি পরব্রহ্ম। অনান্য দেব দেবী মানুষের মঙ্গলার্থে তাঁর বিভিন্ন রূপের প্রকাশ মাত্র। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র অনুসারে দেবী দূর্গা ‘দূর্গতিনাশিনী’ বা সকল দুঃখ দুর্দশার বিনাশকারিনী। পুরানকালে দেবতারা মহিষাসুরের অত্যাচারে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর’র শরীর থেকে আগুনের মত তেজরশ্মি একত্রিত হয়ে বিশাল এক আলোক পূঞ্জে পরিণত হয়। ঐ আলোক পুঞ্জ থেকে আর্বিভূত হয় দেবী দূর্গার মূর্তি। দিব্য অস্ত্রে সজ্জিত আদ্যাশক্তি মহামায়া অসুর কুলকে বিনাশ করে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে শান্তি স্থাপন করেন।
দেবী দূর্গা ত্রি-নয়না ও ‘ত্রৈম্বক্যে’ বলে পরিচিত । তাঁর বাম চোখ হলো বাসনা, ডান চোখ কর্ম ও কেন্দ্রীয় চোখ হলো জ্ঞান। দেবী দূর্গার দশ হাতে  যে দশটি অস্ত্র রয়েছে, সেই অস্ত্রসমূহও বিভিন্ন প্রতীকের ইঙ্গিতবাহী।

দূর্গা পূজা প্রথম কোথায় শুরু হয়েছিল তা এখনও পযর্ন্ত  জানা যায়নি । ভারতের দ্রাবিড় সভ্যতায় মাতৃতান্ত্রিক দ্রাবিড় জাতির মধ্যে মাতৃদেবীর পূজার প্রচলন ছিল। সিন্ধু সভ্যতায়  দেবীমাতা, ত্রিমস্তক দেবতা, পশুপতি শিবের পূজার প্রচলন ছিল। দূর্গা শিবের অর্ধাঙ্গিনী। ১১ শতকে অভিনির্ণয়-এ, মৈথিলী কবি বিদ্যাপতির দূর্গাভক্তিতরঙ্গিনীতে দূর্গা বন্দনা পাওয়া যায়। ১৫১০ সালে কুচ বংশের রাজা বিশ্ব সিংহ কুচবিহারে দূর্গা পূজার আয়োজন করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
সেই ঐতিহাসিক নিয়ম,নিতি মেনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আজও দেবী দূর্গা মাতার পূজো করে আসছেন।