ছিটমহল বিনিময় , ফিরে দেখা 


ছিটমহল


শুভাশিস দাশ, দিনহাটাঃ  দেশ থেকেও দেশ নেই ! কী অদ্ভুত একটা যন্ত্রণার বীজ পুঁতে গিয়েছিল ইংরেজ শাসকরা । আর এই যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ছয় দশক পার করেছেন ছিটমহল এর বাসিন্দারা ! এই ছিটমহল সমস্যার সমাধান কিন্তু একদিনে হয় নি ! মনে আছে বেরুবাড়ী আন্দোলনের কথা ? সেই থেকে এই ছিটমহলের আন্দোলন শুরু ! 

যাঁরা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই আজ ইহজগতে নেই ! এঁদের মধ্যে প্রয়াত অমর রায় প্রধান , নির্মল বসুর নাম উল্লেখ যোগ্য ।


একটু ফিরে দেখার যাক , ১৯৪৭ এর দেশ ভাগের পরবর্তী সময়ে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ছিটমহল বাসিরা ভারতীয় নাগরিক হিসাবে তাঁদের মৌলিক অধিকার গুলো ভোগ করতে পারতেন । পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে তাঁরা বঞ্চিত হতে থাকেন সে সব সুবিধা থেকে । ১৯৬৫ সালের পাক ভারতে যুদ্ধের পর দুদেশের সম্পর্কে আরো অবনতি দেখা দেয় ফলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় । 

ছিটমহল



ভারতীয় ছিটমহল ১১১ টি এবং বাংলাদেশের ৫১টি । 
ছিটমহল বিনিময়ে ভারতের জমির ক্ষতিই বেশি হয়েছে । 

ছিটমহল নিয়ে ষাটের দশকে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল , সেই আন্দোলন কে চরম অবস্থায় পৌঁছে দেয় ভারত বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি । প্রয়াত নেতা দীপক সেনগুপ্তের যোগ্য উত্তর সুরি দীপ্তিমান সেনগুপ্ত এই কমিটির হাল ধরে ছিটমহল এর মানুষদের দেশে দিয়েছেন । 

দীর্ঘ সংগ্রামের পর ২০১৫ সালের ৩১শে জুলাই দুদেশের ছিটমহল বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । মুক্তি পায় প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ দুদেশের । 

অবসান হয় যন্ত্রণার ! কিন্তু প্রকৃত অর্থে কি ওঁদের যন্ত্রণার মুক্তি ঘটেছে ? 

ভারতের গণতন্ত্রে ভোট বড় বালাই ! কাজেই রাজনীতির স্বার্থে সমস্যা জিইয়ে রাখার একটা পরিকল্পিত বিষয় তো রয়েছেই ! 

ছিটমহল



তবু মন্দের ভাল অন্তত অন্যের বাবার নাম নিজের বাবা বলে আর চালাতে হবেনা সাবেক ছিটমহল বাসীর । 

দেখতে দেখতে পাঁচ বছর অতিক্রম হলো এই বিনিময়ের । ছিটমহলে উৎসব হচ্ছে , স্মরণ উৎসব ! ঐ উৎসব যেন সাবেক ছিটমহল বাসীদের উৎসব হয়েই থাকে ।