ফলশয্যার রাতে কী এমন ঘটলো, যে বরকে চলে যেত হলো হরিদ্বারে !
উত্তরপ্রদেশের মিরাটে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি যেন সিনেমার মতোই নাটকীয়। জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—ফুলশয্যা। সাজানো ঘরে নববধূ বসে আছেন, আর ধীর পায়ে প্রবেশ করছেন বর মহসিন। ঘরের আলো ছিল তীব্র, নববধূ তখন হালকা আবদার করে বললেন, আলোটা যদি একটু কম পাওয়ারের হয় তবে ভালো হয়। এই সামান্য কথাতেই মহসিন হঠাৎ অস্বস্তি অনুভব করেন। তিনি ঘাবড়ে গিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন।
পরিবার প্রথমে ভেবেছিল, হয়তো তিনি সত্যিই কম পাওয়ারের বাল্ব কিনতে গেছেন। কিন্তু রাত কেটে গেলেও তিনি আর ফেরেননি। পরদিন ছিল তাঁর দুই বোনের বিয়ে। সারা দিন ধরে বিয়ের আয়োজন চলল, সবাই আশা করেছিলেন অন্তত সে দিন তিনি ফিরবেন। কিন্তু মহসিন আসেননি। আনন্দমুখর পরিবেশ মুহূর্তে ম্লান হয়ে গেল। পরিবারের বুক কেঁপে উঠল আশঙ্কায়—কোনও অঘটন ঘটল কি না। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হলো। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেল, মহসিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গঙ্গার ঘাটের দিকে যাচ্ছেন। গঙ্গায় ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ চালানো হলো, কিন্তু তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া গেল না।
পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর হঠাৎই সোমবার বাড়িতে ফোন আসে। মহসিন নিজেই জানান, তিনি হরিদ্বারে রয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও পরিবার সেখানে ছুটে যায়। তাঁকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। সবাই অবাক হয়ে যান—কেন তিনি ফুলশয্যার রাতেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন?
মহসিনের উত্তর শুনে হতবাক হয়ে যায় পরিবার ও পুলিশ। তিনি বলেন, নববধূর সামনে গিয়ে হঠাৎই প্রচণ্ড মানসিক চাপ অনুভব করেন। বাল্ব বদলের আবদার শুনে আরও অস্থির হয়ে পড়েন। সেই চাপ থেকে মুক্তি পেতে তিনি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। কখনও হেঁটে, কখনও বাসে চেপে প্রায় ১৪৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যান হরিদ্বারে। গঙ্গার ঘাটে বসে দু’দিন ঠান্ডা হাওয়া খেয়ে মনকে শান্ত করেন। কয়েক দিন পর মানসিকভাবে স্থির হয়ে সংসার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
এই ঘটনাটি শুধু একটি পরিবারের নয়, সমাজেরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। একদিকে নববধূর সামান্য আবদার, অন্যদিকে বরের অপ্রস্তুত মানসিক অবস্থা—দুইয়ের সংঘাতেই তৈরি হলো এক অদ্ভুত পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত মহসিন সুস্থভাবে ফিরে আসায় স্বস্তি পেয়েছে পরিবার।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊