জীবনের সব প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কাকদ্বীপের দুই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রী
জীবনের সব প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হল কাকদ্বীপের হরিপুর দাসপাড়ার বাসিন্দা দুই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রী। দুজনেই কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর জ্ঞানদাময়ী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রী। একজন হল সঞ্চিতা গিরি ও অপরজন মুক্তা দাস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুজনেই ১০০ শতাংশ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রী। সঞ্চিতার উচ্চতা মেরে কেটে ২ ফুট। হাঁটা তো দূরের কথা ঠিক মতো সে বসতেই পারেনা। প্রতিদিন মায়ের কোলে চড়ে স্কুলে গিয়েছে। সিট বেঞ্চে একপ্রকার শুয়ে শুয়ে খাতা পেন নিয়ে ক্লাস করত। প্রথম থেকেই তার কোন গৃহশিক্ষক ছিল না। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ও ঘরে বসে একা পড়াশোনা করেছে। বাবা স্বপন গিরি অন্যের দোকানের কর্মচারী। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে নিজের জেদেই সঞ্চিতা পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় সে ২১০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। আগামী দিনেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি সঞ্চিতা ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসে। ভবিষ্যতে সে আর্ট কলেজে পড়াশোনা করে চিত্রশিল্পী হতে চায়।
মৎস্যজীবী পরিবারের সন্তান মুক্তাও প্রতিদিন জীবনের সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে সে আর পাঁচজনের মতোই স্বাভাবিক। কিন্তু জন্ম থেকেই মুক্তা মুক ও বধির। কানে একদমই শুনতেও পায় না, কথাও বলতে পারে না। ছোটবেলা থেকে দিদিদের পড়াশুনা করতে দেখেছে। তাঁদের পাশে বসে খাতা পেন নিয়ে সে এক সময় খেলা করত। সেই খেলার ছলেই যে মুক্তা একসময় স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ চিনে নিতে পারবে, তা পরিবারের কেউই ভাবতে পারেননি। স্কুলের ক্লাসের শিক্ষকদের মুখ নাড়া দেখে সে পড়াশোনা আয়ত্ত করত। এবছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ২১১ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
এবিষয়ে অক্ষয়নগর জ্ঞানদাময়ী বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার মাইতি বলেন, "স্কুলের শিক্ষকদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। সঞ্চিতা ও মুক্তা পাস করায় প্রত্যেকেই খুব খুশি। এই দুই ছাত্রীর বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে স্কুলের পক্ষ থেকে স্পেশাল ক্লাস করা হয়েছে। এমনকি ছুটির সময়েও এই দু'জন ক্লাস করেছে।"
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊